মঙ্গলবার, মে ০৩, ২০১৬

দুটি পত্রিকা ছাড়া বাংলাদেশের সব গণমাধ্যম ‘মুক্ত ও স্বাধীন’!



কদরুদ্দীন শিশির:

গত ফেব্রুয়ারি মাসে যখন ডেইলি স্টার সম্পাদক ও প্রথিতযশা সাংবাদিক মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা গণহারে মামলা করছিল তখন ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব জার্নালিস্ট (আইএফজ) এক বিবৃতিতে বলেছিল, “ইতোমধ্যে মারাত্মক চ্যালেঞ্জের মুখে থাকা বাংলাদেশের মিডিয়া পরিস্থিতির জন্য এটা অত্যন্ত উদ্বেগজনক খবর।”


একই মাসে এইচআরডব্লিউর বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় বিভিন্ন পত্রিকার সম্পাদকদের বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে মামলা করার ঘটনাগুলো দেশটির সকল মিডিয়াকে হয়রানি করার স্পষ্ট প্রমাণ।’

বাংলাদেশের গণমাধ্যম পরিস্থিতির সর্বশেষ চিত্র ফুটে উঠেছে মাত্র দুই সপ্তাহ আগে (১৯ এপ্রিল) দেয়া তিনটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা যথা- এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশন (এএইচআরসি), ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন ফর হিউম্যান রাইটস (এফআইডিএইচ) এবং দ্য ওয়ার্ল্ড অর্গানাইজেশন অ্যাগেইনস্ট টর্চার (ওএমসিটি)- এর পর্যবেক্ষণ থেকে।  তারা বলেছিল--

“মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে দমিয়ে রাখতে বাংলাদেশ সরকারের পদক্ষেপ অব্যাহত রয়েছে। সরকারের সমালোচনামূলক প্রতিবেদন প্রকাশের কারণে বেশ কয়েকজন সিনিয়র সাংবাদিক এবং লেখককে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ আনা হয়েছে। ৮১ বছর বয়সী লেখক, মৃত্যুদণ্ডবিরোধী ক্যাম্পেইনার, টিভি উপস্থাপক এবং সাংবাদিক শফিক রেহমান বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে বিচারবিভাগীয় পদ্ধতিগত নিপীড়নের তালিকায় সর্বশেষ ভিকটিম হিসেবে যুক্ত হয়েছেন।”

বাংলাদেশে গণমাধ্যম ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর সরকারি এবং ধর্মীয় উগ্রপন্থীদের অব্যহাত আক্রমণের খবর এখন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে নিয়মিত আইটেম। এর সর্বশেষ উদাহরণটি দেয়া যায় ২ মে 'এশিয়া টাইমস'-এ প্রকাশিত প্রতিবেদনটি দিয়ে। যার শিরোনাম ছিল 'Bangladesh: Journalists become main targets as govt cracks down on dissent'.

এই হল বাংলাদেশের গণমাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের পর্যবেক্ষণ ও মনোভাব। তার সাথে আমাদের চোখের সামনের নানা বিষয়াদি যোগ করলে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ ঠেকে।

সরকার গণমাধ্যম সংক্রান্ত নতুন নতুন আইন তৈরি করছে বা করার চেষ্টায় আছে। বিশেষ করে সম্প্রতি ৩০ দিনের বেশি কোনো সংবাদমাধ্যম বন্ধ থাকলে তার ডিক্লারেশন বাতিল করার যে আইনি প্রস্তাব আনা হয়েছে তাকে গণমাধ্যমের জন্য বড় ধরনের হুমকি হিসেবে মনে করা হচ্ছে। এর বাইরে সংশ্লিষ্ট অংশজীনের মতামত না নিয়ে বা মতামতকে তোয়াক্কা না করে গণমাধ্যম সংক্রান্ত একাধিক নীতিমালা চুড়ান্ত করা হয়েছে বা করার প্রক্রিয়ায় আছে।

সরকারের মতের থেকে ভিন্নমত প্রচারের কারণে গত কয়েক মাসে অন্তত চারজন প্রথম শ্রেণীর সংবাদমাধ্যমের সম্পাদক এবং মালিক গ্রেফতার বরণ করেছেন। অন্য দুইজন সম্পাদকের প্রত্যেক্যের বিরুদ্ধে সম্প্রতি অর্ধশতাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে সরকারি দলের নেতাকর্মীদের দ্বারা। সরকারের দায়িত্বশীল উর্ধ্বতন ব্যক্তিদের অনেকে চুন থেকে পান খসলেই ‘অমুক সম্পাদককে গ্রেফতার করা উচিত’ ‘অমুক পত্রিকা বন্ধ করে দেয়া উচিত’ এরকম চরম গণতন্ত্রবিরোধী কথাবার্ত বলে থাকেন। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী এবং তথ্যমন্ত্রী মাঝে মাঝেই গণমাধ্যমে বিশেষ বিশেষ সংবাদের কভারেজ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।

পত্রিকা, টেলিভিশনসহ বেশ কিছু গণমাধ্যম বন্ধ হয়ে আছে। সামাজিক মাধ্যমগুলো একাধিকবার বন্ধ করে রাখা হয়েছে। ফেইসবুক ব্যবহারকারীদের বিষয়ে নানা তথ্য ফেইসবুক কর্তপক্ষের কাছ থেকে নেয়ার চেষ্টা করে বিরোধী মতের ব্যবহারকারীদের চাপে রাখা হয়েছে। সরকারের স্বার্থের সাথে বিরোধ তৈরি হয় এমন ইস্যুতে লেখালেখি/ব্লগিংকে নানাভাবে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। ক্ষমতাসীনদের সমালোচনা করে দেয়া ফেসবুক স্ট্যাটাসের কারণে জেলজুলুম হচ্ছে, চাকরি যাচ্ছে। পছন্দ মতো সংবাদ পরিবেশিত না হলে বড় বড় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে দেশি বিদেশী কোম্পানিকে বাধা দেয়া হচ্ছে।

(এসবের সাথে আজ ৩ মে ‘মুক্ত গণমাধ্যম দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় দেয়া মানবাধিকার নেত্রী ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামালের বক্তব্য উদ্ধৃত করা যায়। তিনি বলেছেন ‘মানুষ কথা বলতে ভয় পাচ্ছে, সেটা আমরা অস্বীকার করতে পারব না।’ প্রথম আলো থেকে নেয়া তার বক্তব্যে আরেক অংশ হল ‘কথা বলতে বা মত প্রকাশ করতে না পারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী। সবকিছুই যে সরকার করে দেবে, তা নয়। নাগরিকদেরও দায়িত্ব আছে।’)

এমন এক পরিস্থিতিতে আজ ৩ মে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস পালিত হল।

উপরে উল্লিখিত নানা ঘটনা ও তথ্য থেকে বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নাজুক পরিস্থিতি নিয়ে তো আর কোনো সন্দেহ থাকার সুযোগ নেই।

যখন কোনো পক্ষ নাজুক অবস্থায় থাকে তখন সাধারণ নীতি অনুযায়ী আমরা সেই পক্ষটির হয়ে উচ্চকণ্ঠ হই (ভয়েস রেইজিং)। তাদের হয়ে কথা বলি। যেমন বর্তমান বাংলাদেশে কথিত ‘সেকুলার’ চিন্তার এবং সংখ্যালঘু নানা সম্প্রদায়ের কিছু মানুষ ধর্মীয় উগ্রপন্থীদের দ্বারা আক্রান্ত হয়ে নাজুক অবস্থায় পড়েছেন। এখন ‘সেকুলার’ অথবা ‘নন-সেকুলার’, ধার্মিক-বিধর্মী সচেতন (সেন্সিবল) সব পক্ষ আক্রান্তদের হয়ে সরব হয়েছেন। গণমাধ্যমও সরব হয়েছে। এটাই স্বাভাবিক বিষয়।

আবার কোনো দিবসকে আমরা পালন করে থাকি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ‘ভয়েস রেইজ’ করার জন্য। ৩ মে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষ্যে সারাবিশ্বের স্বাধীন গণমাধ্যমে নিজেদের ‘দুঃখ-কষ্টের কথা’ তুলে ধরেছেন সাংবাদিকরা। তাদের পাশে থেকে ‘ভয়েস রেইজ’ করেছেন স্বাধীন গণমাধ্যমের পক্ষে কাজ করা নানা সংস্থা, প্রতিষ্ঠান।

কিন্তু বাংলাদেশের গণমাধ্যমে দিনটি কিভাবে চিত্রিত হয়েছে? নিজেদের নাজুক পরিস্থিতি নিয়ে কি কিছু বলতে বা বুঝাতে চেয়েছে এখানকার গণমাধ্যমগুলো? নিজেদের ‘দুঃখকষ্ট’ কিভাবে ফুটিয়ে তুলেছে তারা? আমরা খুবই সংক্ষিপ্ত পরিসরে এখানকার উল্লেখযোগ্য পত্রিকাগুলো ঘেঁটে এ প্রশ্নের উত্তর জানার চেষ্টা করবো।

৩ মে’র প্রথম আলো, সমকাল, ইত্তেফাক, কালের কণ্ঠ, ইনকিলাব, ডেইলি স্টার, যুগান্তর, জনকণ্ঠ, নিউ এইজ এবং বাংলাদেশ প্রতিদিন- এই দশটি পত্রিকা দেখা হয়েছে। এর মধ্যে ডেইলি স্টার এবং প্রথম আলোকে এদেশের গণমাধ্যম পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন মনে হয়েছে।

সম্প্রতি সরকারি দলের ৭০টিরও বেশি মামলায় আসামী হওয়া এবং পরে জামিন পাওয়া সম্পাদক মানফুজ আনামের ডেইলি স্টার প্রথম পাতায় ‌‘World Press Freedom Day Today: Danger comes with restriction’ শিরোনামের ডাবল কলাম বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। যেখানে খুব জোরালো ভাষায় না হলেও (প্রকৃতপক্ষে মিনমিনে ভাষায়) মোটামুটি বাংলাদেশের বর্তমান গণমাধ্যম পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ ছিল। যেমন একদম শেষ লাইনে বলা হয়েছে, ‘The real spirit of the freedom of the press is however largely absent in Bangladesh.’

এই প্রতিবেদনের পাশাপাশি উপসম্পাদকীয়তে এক পাতাজুড়ে এ সংক্রান্ত দুটি লেখা ছাপিয়েছে ডেইলি স্টার। এর মধ্যে একটার শিরোনাম হচ্ছে, ‘Who says we're not free?’ সাথে ছিল বন্দি একজন মানুষের গ্রাফিক্সের পাশে লেখা ‘আই এম ফ্রী’। এতে ব্যঙ্গাত্মকভাবে বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষ্যে ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের বিবৃতি প্রকাশ করেছে পত্রিকাটি।

প্রথম আলোর প্রথম পাতায় সিঙ্গেল কলামে ‘বাংলাদেশে মুক্ত গণমাধ্যম বহুদূর’ শিরোনামের বিশ্লেষণী প্রতিবেদনটির সাথে ‘পত্রিকা বন্ধ করার প্রস্তাব গণতন্ত্র ও সভ্যতারিরোধী’ শীর্ষক সম্পাদকীয় প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে--

“এই প্রেক্ষাপটে প্রেস কাউন্সিলের আদেশ না মানলে সংবাদপত্র সর্বোচ্চ ৩০ দিন বন্ধ রাখতে খোদ আইন কমিশনের প্রস্তাবে আমরা স্তম্ভিত। বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলোতে আইন কমিশন ও বিচার বিভাগীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ঐতিহ্যগতভাবে সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে সুদৃঢ় করতেই ভূমিকা পালন করে থাকে। নব্বইয়ে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সাফল্য ছিল ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন থেকে পত্রিকা বন্ধ করে দেওয়ার কালাকানুন বাতিল করা। এ জন্য বিচারপতি সাহাবুদ্দীনের অস্থায়ী সরকার কৃতিত্ব দাবি করতে পারে।
এখন সিকি শতাব্দী পরে অংশীজনদের সঙ্গে কোনো আলাপ-আলোচনা ছাড়াই প্রায় বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতোই একটু ভিন্ন আঙ্গিকে হলেও পত্রিকা বন্ধের মতো বিধান পুনরুজ্জীবনের প্রস্তাব সামনে আনা হয়েছে।...সাংবাদিক সমাজের দীর্ঘ আন্দোলনের ফলে যে কালাকানুন বাতিল হয়েছে, সেটি ফিরিয়ে আনার প্রস্তাব যেমন গণমাধ্যমের ওপর আঘাত, তেমনি গণতন্ত্র ও সভ্যতারও পরিপন্থী। মুক্ত গণমাধ্যম দিবসের প্রত্যাশা সব ধরনের কালাকানুন, প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য বাধা ও হুমকির অবসান।”

অবশ্য প্রথম পাতায় একটি প্রতিবেদন এবং সম্পাদকীয় এর বাইরে কোনো উপসম্পাদকীয় পাতায় দিবসটি উপলক্ষ্যে ‘বিশেষ লেখা’ না থাকাটা চোখে লেগেছে। কারণ অতীতে এই দিবসে এমন এক বা একাধিক লেখা প্রথম আলোতে ছাপা হয়েছে। ‘বিশেষ প্রতিবেদন’ ‘সম্পাদকীয়’ এর পাশাপাশি ‘উপসম্পাদকীয়’ও থাকলে কি-না আবার এই ইস্যুতে ‘বেশি ফোকাস’ হয়ে যায়, এই ‘ভয়ে’ প্রথম আলো তা ছাপানো থেকে বিরত থেকেছে কিনা কর্তৃপক্ষই ভাল জানেন!

দৈনিক ইনকিলাব প্রথম পাতায় ৩ কলামে টিআইবির দিবস উপলক্ষ্যে দেয়া বিবৃতি (টেকসই উন্নয়নের জন্য গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে) এবং সিঙ্গেল কলামে বার্নিকাটের বিবৃতি ছাপিয়েছে। সাথে ছিল উপসম্পাদকীয় পাতায় একটি লেখা।

এর বাইরে বাকি উল্লিখিত পত্রিকাগুলোতে বাংলাদেশে বর্তমান গণমাধ্যম পরিস্থিতিতে নিয়ে কোনো উদ্বেগ পরিলক্ষিত হয়নি।

সমকালের ১৯ তম পাতায় শুধু 'আজ বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস' শিরোনামে একটি প্রতিবেদন ছিল। কালের কণ্ঠের শেষ পাতায় একই শিরোনামে সিঙ্গেল কলাম খবরের সাথে প্রথম পাতায় বার্নিকাটের বিবৃতিটি তার নামে সিঙ্গেল কলামে ছাপা হয়েছে। যুগান্তর দিবসকে নিয়ে কোনো প্রতিবেদনই ছাপায়নি। শুধু বার্নিকাটের বিবৃতিটি উপসম্পাদকীয় পাতার এক কোনায় রেখে দিয়েছে। ইত্তেফাক এবং জনকণ্ঠও দিবস নিয়ে কোনো আলাদা প্রতিবেদন ছাপেনি (কোনো লেখাও নেই)। যথাক্রমে বার্নিকাট এবং টিআইবির বিবৃতি সিঙ্গেল কলামে ছাপিয়েছে।

বাংলাদেশ প্রতিদিন ১১ এর পাতায় সিঙ্গেল কলামে ‘মুক্ত গণমাধ্যম দিবস আজ’ এর সাথে ‘চিঠিপত্র’ হিসেবে উপসম্পাদকীয় পাতায় একটি ছোট লেখা ছাপিয়েছে ‘মুক্ত গণমধ্যম ও জনগণের গণমাধ্যম মনস্কতা’ শিরোনামে। উল্লিখিত বিভিন্ন পত্রিকার ‘মুক্ত গণমাধ্যম দিবস আজ’ শিরোনামের প্রতিবেদনগুলোতে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর বক্তব্য গুরুত্বসহকারে ছাপা হয়েছে। তবে ছিল না গণমাধ্যম বিশেষজ্ঞদের কোনো বক্তব্য।

নিজেদের ‘দুঃখকষ্ট’ তুলে ধরার এবং গণমাধ্যমের সমস্যা নিয়ে ‘ভয়েস রেইজ’ করার এই দিনে বাংলাদেশের দুই/তিনটি পত্রিকা ছাড়া বাকিদের চেহারায় কী অদ্ভুত নিরুদ্বেগ ভাব! যেন এসব উদ্বেগহীন গণমাধ্যমগুলো নিজেরা খুব ‘মুক্ত ও স্বাধীন’! কারো বিরুদ্ধে তাদের কোনো অভিযোগ নেই, ‘দুঃখকষ্ট’ নেই! অভিযোগ থাকলে তো অন্তত প্রথম আলো বা ডেইলি স্টারের মতো করে ‘সতর্ক কণ্ঠে’ হলেও কিছু বলতো।

তাহলে কি আমরা বাংলাদেশি সংবাদ-গ্রাহকরা স্থানীয় গণমাধ্যমের যে পরিস্থিতি নিজেদের চোখে দেখছি এবং আন্তর্জাতিক মহল তা নিয়ে যেসব উদ্বেগ প্রকাশ করছে তার ‘সবই ভুল’?!

তার মানে তো এটাই দাঁড়ায় যে, প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টারই শুধু ‘কিছুটা’ ‘স্বাধীনতাহীতায়’ ভুগছে এবং এ কারণে তারা কিছুটা হলেও উদ্বিগ্ন। আর বাকি সব পত্রিকা তথা গণমাধ্যম পুরোপুরি ‘মুক্ত ও স্বাধীন’, ফলে তারা নিরুদ্বেগ। তাই নয় কি?

............
এডিটেড

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন